বাইপোলার ডিজঅর্ডার কী?

বাইপোলার ডিজঅর্ডারে আক্রান্ত ব্যক্তিদের মনের ভাব খুব দ্রুত পরিবর্তিত হয়।এখানে দুটো পর্যায় থাকে বিষণ্ণতা  এবং ম্যানিয়া বা উত্তেজনা।তারা দুটি আচরণ বেশ প্রবলভাবে প্রদর্শন করেন এবং খুবই দ্রুত এক আচরণ থেকে অন্য আচরণে বদলে যান। এ কারণে এ ব্যাধির সঠিক চিকিৎসা বেশ সময়সাপেক্ষ।তবে দুই মধ্যে মেজাজের স্বাভাবিক অবস্থাও বিরাজমান থাকে।

যেহেতু বাইপোলার ডিজঅর্ডারে ব্যক্তির মনের ভাব প্রবলভাবে প্রভাবিত হয়, তাই এ সমস্যাকে ভাবসম্পর্কিত মানসিক ব্যাধির অন্তর্ভুক্ত এক ধরনের বিষণ্ণতার কাতারে ফেলা হয় তবে, যেহেতু ম্যানিয়া পর্যায়ে বিরাজমান কিছু লক্ষণের মধ্যে সাইকোসিস-এর লক্ষণসমূহ বিরাজমান থাকে, তাই এ সমস্যাকে অনেকে সাইকোসিস-এর অন্তর্ভুক্তও করে থাকেন।

বিষণ্ণতা পর্যায়ের লক্ষণসমূহ


বাইপোলার ডিজঅর্ডারে আক্রান্ত ব্যক্তির মধ্যে বিষণ্ণতা পর্যায়ে নিচের লক্ষণগুলো দেখা যায়।

  •     একটি অস্বাভাবিক দুঃখভারাক্রান্ত মন, যা সহজে ভালো হচ্ছে না;
  •     বিভিন্ন কাজে আগে আনন্দ ও উদ্দীপনা অনুভব করলেও এখন তা অনুপস্থিত;
  •     শক্তিহীনতা ও ক্লান্তি।
  •     আত্মবিশ্বাসের অভাব ও দুর্বল আত্মসম্মানবোধ;
  •     অপরাধ না করেও অপরাধবোধে ভোগা;
  •     মনোযোগ স্থাপন বা সিদ্ধান্ত গ্রহণে সমস্যায় ভোগা;
  •     চলাফেরায় শ্লথ গতি, আবার মাঝে মাঝে খুব উত্তেজিত হয়ে পড়া;
  •     ঘুমের সমস্যা বা বেশি ঘুমানো;
  •     খাদ্যে অরুচি বা বেশি খাওয়া : খাদ্যাভাসে পরিবর্তনের কারণে ওজনস্বল্পতা বা ওজন বৃদ্ধি পাওয়া;
  •     আত্মহত্যার চিন্তা।

ম্যানিয়া পর্যায়ের লক্ষণসমূহ


  •    শক্তি বেড়ে যাওয়া ও অতি কর্মক্ষমতা প্রদর্শন : ব্যক্তি হঠাৎ করে স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি কাজ করার সক্ষমতা প্রদর্শন করেন। অনেক বেশি কাজ করার পরেও তাদের ক্লান্ত দেখা যায় না;
  •   মেজাজ চরম অবস্থায় থাকে।একজন মানুষ খুব উত্তেজিত, আনন্দিত, শক্তিতে ভরপুর এবং নিজেকে বিশ্বসেরা ও অপরাজেয় অনুভব করতে পারেন;
  •   স্বাভাবিকের তুলনায় কম ঘুমের প্রয়োজন হওয়া : অল্প পরিমাণ বা বিন্দুমাত্র ঘুম ছাড়াই ব্যক্তি কয়েক দিন কাটিয়ে দিতে পারেন;
  •    পর্যাপ্ত বিশ্রামের অভাবে তার মধ্যে অবসাদও দেখা যেতে পারে;
  •    বিরক্তিকর আচরণ : ব্যক্তির বিভিন্ন অবাস্তব ধারণা বা চিন্তার সাথে একমত পোষণ না করলে তিনি এধরনের আচরণ করতে পারেন।বিশ্রাম বা ঘুম ছাড়া দীর্ঘদিন কাটালে ক্লান্তির কারণে ও তিনি এ আচরণ করতে  পারেন;
  •     এ সময় তিনি খুব দ্রুত চিন্তা করেন, খুব দ্রুত কথা বলেন ও কথা বলার বিষয় দ্রুত বদলাতে থাকেন;
  •    তিনি ঝুঁকি বা বিপদকে আমলে নেন না, অঢেল টাকাপয়সা খরচ করেন, খুব স্পষ্ট মতামত প্রকাশ করেন অথবা বেশি বেশি যৌনশক্তি অনুভব করেন;
  •     নিজের ক্ষমতা সম্পর্কে ভ্রান্ত ধারণা পোষণ করেন। উদাহরণস্বরূপ, এ সময় তিনি নিজেকে দেশের প্রধানমন্ত্রী বা কোনো মহান মানুষ মনে করেন;
  •    এ সময় তার অন্তর্দৃষ্টির ঘাটতি থাকতে পারে। তিনি তার ভ্রান্ত ধারণাগুলোকে খুবই বাস্তব মনে করেন এবং বিশ্বাস করতে চান না যে তিনি অসুস্থ।